ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ব্যবসা-বিনিয়োগে কেন গতি ফেরানো জরুরি?

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 16, 2025 ইং
ব্যবসা-বিনিয়োগে কেন গতি ফেরানো জরুরি? ছবির ক্যাপশন: ব্যবসা-বিনিয়োগে কেন গতি ফেরানো জরুরি?
ad728

হু আকাঙ্ক্ষার অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ১০ মাস শেষ। আর দুই মাসেরও কম সময়ে এক বছর পূর্তি হবে। তখন হয়তো কঠিন আত্মত্যাগের এই সরকার নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করা হবে। সরকারের ভালো-মন্দ মূল্যায়ন হবে। হয়তো প্রশংসা কিংবা সমালোচনাও হবে।

যদিও গত ১০ মাসে আর কোনো খাতে কী সাফল্য-ব্যর্থতা বা অর্জন যাই হোক না কেন; অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য যে একটি কঠিন ক্রান্তিকাল পার করছে তার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা।

সরকারের শুরুতে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা মহলের দিক থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিলো—হয়তো ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। লুটপাট, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচার কমবে। ডলারসংকট কাটবে। বেসরকারি খাতে ঋণ সহজলভ্য হবে। সুদের হার কমবে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থানের দুয়ার খুলবে। বিদ্যুৎ-জ্বালানিসংকট কেটে গিয়ে কারখানা চলবে নিরবচ্ছিন্নভাবে। শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তায় সবার মধ্যে স্বস্তি আসবে। বাণিজ্য সাংবাদিকতার সুবাদে প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা হয়।

তাদের প্রায় সবারই এক কথা—এখনো তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বরং তাদের মধ্যে হতাশা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা এখন আর অভিযোগ করতে চান না। অনেকটা হতোদ্যমই বলা যায়। তারা বরং এখন কায়মনোবাক্যে চান সংকট থেকে উত্তরণ।

এই লেখাটি যখন শুরু হয়, তখনই খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তথ্য জানা গেল। তাতে দেখা যায়, ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে! গত মার্চ পর্যন্ত তা ছাড়িয়েছে চার লাখ ২০ হাজার কোটির ঘর। মানে খেলাপি ঋণের আসল চিত্র বের হয়ে আসছে। এটি আগের সরকারের ঘনিষ্ঠদের ব্যাংক খাতের বল্গাহীন লুটপাটের পরিণামই বলা যায়! আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে খেলাপি ঋণ গণনায় ছয় মাসের পরিবর্তে তিন মাস করায় খেলাপি ঋণের আসল চেহারা ভেসে উঠছে!

কিন্তু এভাবে খেলাপি ঋণ গণনার খারাপ দিক হলো—এতে ব্যবসায়ীরা ঋণের কিস্তি শোধে সময় কম পাচ্ছেন। কোনো কারণে একটি ভালো ব্যবসায়ীর সময় খারাপ গেলে, কিস্তি দিতে অসুবিধা হলেই খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন। এতে বিদ্যমান ব্যবসাটি যেমন আরো রুগ্ণ হয়ে পড়ছে, আবার নতুন করে যে ঋণ পাবেন—এমন সুযোগও কমে যাচ্ছে।

আমাদের সংবাদকর্মীরা যেসব খবর দিচ্ছেন বা আমরা যেসব তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করছি বা উদ্যোক্তারা যা বলছেন, তাতে এটা অন্তত বলা যাচ্ছে, সত্যিকার অর্থে এখন ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো চলছে না। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলার যে অবনতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছিল, তাতে এখনো পুরো লাগাম দেওয়া যায়নি।


নিউজটি আপডেট করেছেন : বার্তা সম্পাদক

কমেন্ট বক্স