নিয়োগের মাত্র কয়েক সপ্তাহের মাথায় সোমবার (৬ অক্টোবর) পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। ১৯৫৮ সালের পর দেশটির সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রধানমন্ত্রীর রেকর্ড করছেন তিনি।
সোমবার স্থানীয় সময় সকালে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন লেকর্নুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন—এর কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি তার মন্ত্রিসভার প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছিলেন।
এর আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া লেকর্নু তার নতুন মন্ত্রিসভার গঠন ঘোষণার পর থেকেই নিজ দলের ভেতর এবং বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। এই পদত্যাগে ফ্রান্সে নতুন করে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে, যা ম্যাকরনের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে—কারণ এর আগে তিনটি সংখ্যালঘু সরকার ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে।
লেকর্নুর সামনে ছিল ফ্রান্সের ক্রমবর্ধমান বাজেট ঘাটতি কমানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ—সংসদে নতুন করে বাজেট পাশ করিয়ে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্বই ছিল তার।
২০২৪ সালে ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি দাঁড়ায় জিডিপির ৫.৮ শতাংশে, আর ঋণের পরিমাণ ১১৩ শতাংশে—যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩ শতাংশ সীমার অনেক উপরে।
তার মন্ত্রিসভার ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জনই ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকারের সদস্য, যা নতুনত্বহীন ও ‘রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা শূন্য’ বলে সমালোচনা করেন বিশ্লেষকরা।
রোববার (৫ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রক্ষণশীল নেতা ব্রুনো রেতাইয়ো বলেন, ‘সরকারের গঠন প্রতিশ্রুত পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটায়নি।’
ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) দলের নেতা জর্ডান বারদেল্লা, মারিন ল্য পেনের সঙ্গে এক যৌথ বক্তব্যে, সংসদ ভেঙে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ভোটে না ফেরা পর্যন্ত স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে না। আমি আশা করি এ সিদ্ধান্ত শিগগিরই আসবে।’
প্রেসিডেন্টের নিজ দল ‘রেনেসাঁ’তেও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাজেট নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছার পর সরকার গঠন করার যে প্রস্তাব তিনি দিয়েছিলেন, তা মানা হয়নি।
নিজ দলের সংসদীয় গ্রুপে পাঠানো বার্তায় আতাল লেখেন, ‘লেকর্নুর স্বল্পস্থায়ী সরকারের পর পুরো রাজনৈতিক শ্রেণির যে করুণ দৃশ্য আমরা দেখছি, তা অত্যন্ত হতাশাজনক।’