আর্থিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। খেলোয়াড় বেতন, ট্রান্সফার ব্যয় ও আর্থিক নিয়মের চাপে বহুদিন ধরেই সংকটে ক্লাবটি। এবার সেই চাপ সামাল দিতে লা লিগার কাছে ‘ঐতিহাসিক’ এক দাবি জানিয়েছে কাতালানরা। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, বার্সেলোনা চায়—নারী ও যুব দলের খরচ যেন মূল দলের বাজেটের অংশ হিসেবে গণ্য না করা হয়। ক্লাবের হিসাব ও ব্যয়সীমা কিছুটা হালকা করতেই বার্সার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।

লা লিগার ফাইনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়ম অনুযায়ী এতদিন নারী ও যুব দলের খরচও মূল দলের বাজেটের সঙ্গে একত্রে বিবেচিত হতো। এতে করে দলবদল ও খেলোয়াড় নিবন্ধনে বার্সেলোনার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায় সীমাবদ্ধতার বেড়া ভাঙা। দীর্ঘ আলোচনার পর ক্লাবটি এই ব্যতিক্রমী অনুরোধ জানিয়েছে—যা স্প্যানিশ ফুটবলে নজিরবিহীন।

গত পাঁচ বছরে বার্সেলোনার অর্থনৈতিক অবস্থান একাধিকবার আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। কোভিড মহামারির সময় প্রথম প্রকাশ্যে আসে তাদের গভীর আর্থিক সংকট। এরপর একে একে ক্লাব ছাড়েন লিওনেল মেসি, সার্জিও বুস্কেটস, জর্দি আলবার মতো কিংবদন্তিরা। পাশাপাশি ক্যাম্প ন্যুর পুনর্গঠন প্রকল্প এবং একাধিক ‘আর্থিক লেভার’ চালু করেও পুরোপুরি সুরাহা হয়নি দেনা। 

এখনও ক্লাবটির ওপর ঝুলছে ১.২ বিলিয়ন ইউরোর বেশি ঋণের বোঝা। তাই নিজেদের এই অবস্থা সামাল দিতে লা লিগা কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হয়েছে বার্সা। লিগ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বার্সেলোনার আশা, বাজেট আলাদা করা গেলে তারা কিছুটা হলেও আর্থিক চাপ থেকে মুক্তি পাবে এবং দল গঠনে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে।

গত মৌসুমে খেলোয়াড় নিবন্ধনের জন্য বার্সাকে সরাসরি স্প্যানিশ সরকারের কাছে যেতে হয়েছিল। ড্যানি ওলমো ও ভিক্টরের মতো খেলোয়াড়দের মাঠে নামানোর জন্য নিতে হয় বিশেষ অনুমতি। বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা দাবি করেছেন, ক্লাবের রাজস্ব এবার ৯৫০ মিলিয়ন ইউরো ছাড়াতে পারে, যা ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। 

তবে অনেকেই মনে করেন, লাপোর্তার এসব বক্তব্য লা লিগাকে চাপ দিতে কৌশল মাত্র। যদি লা লিগা এই নতুন প্রস্তাবে সম্মতি দেয়, তবে বার্সা দলবদলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। শেষ পর্যন্ত বার্সার এই দাবি লিগ কর্তৃপক্ষ মেনে নেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।