ঢাকা | বঙ্গাব্দ

যুদ্ধে ইসরায়েল কেন ইরানের আইআরজিসিকে টারগেট করেছে

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 16, 2025 ইং
যুদ্ধে ইসরায়েল কেন ইরানের আইআরজিসিকে টারগেট করেছে ছবির ক্যাপশন: যুদ্ধে ইসরায়েল কেন ইরানের আইআরজিসিকে টারগেট করেছে
ad728

আইআরজিসি (Islamic Revolutionary Guard Corps – IRGC) হলো ইরানের একটি বিশেষ সামরিক বাহিনী, যা ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর গঠিত হয়। এর মূল কাজ হলো ইসলামি প্রজাতন্ত্রের আদর্শ ও শাসনব্যবস্থা রক্ষা করা। এটি ইরানের সাধারণ সেনাবাহিনী (আর্তেশ) থেকে আলাদা এবং সরাসরি দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেয়ীর অধীনে পরিচালিত হয়।

শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের শীর্ষ সামরিক ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা। যেমন- মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি – IRGC প্রধান, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি – সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ – IRGC এর এয়ার ফোর্স ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট প্রধান, জেনারেল গোলাম আলি রাশিদ – শীর্ষ কৌশলগত কমান্ডার। এছাড়াও, ছয়জন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

যে কারণে IRGC আলোচিত:
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে IRGC-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে, যা প্রথমবারের মতো কোনো দেশের সরকারি সামরিক বাহিনীকে এমনভাবে চিহ্নিত করা হয়। ইসরায়েল ও পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে, IRGC ইরানের আঞ্চলিক আধিপত্য ও সন্ত্রাসবাদের পেছনে অন্যতম চালিকা শক্তি। এটি শুধু সামরিক নয়, বরং ইরানের অর্থনীতি, রাজনীতি ও গোয়েন্দা নীতিতে গভীরভাবে জড়িত।

যে কারণে আইআরজিসিকে টার্গেট করছে ইসরায়েল
* পারমাণবিক কর্মসূচির মূল রক্ষক হিসেবে IRGC
ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ইরান গোপনে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে। IRGC সরাসরি ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনা করে। ফলে, পারমাণবিক কার্যক্রমে বাধা দিতে গিয়ে ইসরায়েল IRGC-এর উপরই হামলা চালাচ্ছে।

* মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব ও প্রক্সি যুদ্ধে IRGC-এর নেতৃত্ব
IRGC-এর কুদস ফোর্স হিজবুল্লাহ (লেবানন), হুথি (ইয়েমেন), হামাস (গাজা), এবং ইরাক-সিরিয়ার বিভিন্ন শিয়া গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে। এসব গোষ্ঠী প্রায়ই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ও ড্রোন হামলা চালায়। ইসরায়েল বিশ্বাস করে, এই আক্রমণের পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী ও যোগানদাতা হল IRGC।

* সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা প্রতিশোধ
ইরান থেকে সরাসরি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল অভিমুখে ছোড়া হয়েছে, যেগুলোর সমন্বয় করেছে IRGC। ইসরায়েল পাল্টা জবাবে IRGC-এর কমান্ডার, সদর দপ্তর ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।

* মানসিক ও সামরিক চাপ তৈরি করা
ইসরায়েল চায় IRGC-এর শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করে সামরিক নেতৃত্বে শূন্যতা সৃষ্টি করতে, যাতে ইরানের প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়। এতে দেশের ভেতরে মানসিক ভীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।

* ভবিষ্যৎ যুদ্ধ প্রতিরোধ
ইসরায়েল বিশ্বাস করে, যদি এখনই IRGC-এর সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ইরান আরও বড় আকারে ইসরায়েলকে আঘাত করতে পারে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : বার্তা সম্পাদক

কমেন্ট বক্স